ব্রিসবেনেও হলো না।
পার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুই দিনে হারের পর ব্রিসবেন টেস্টে ইংল্যান্ড হারল ৮ উইকেটে। ইংল্যান্ডের দেওয়া ৬৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে অস্ট্রেলিয়ার যে কোনো সমস্যাই হবে না, সেটা তো অনুমান করাই যাচ্ছিল।
ট্রাভিস হেড ও মারনাস লাবুশেন ফিরলেও খেলা শেষ করেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও ওপেনার জেইক ওয়েদারাল্ড। ইনিংসের ১০ম ওভারের শেষ বলে ছক্কা মেরে অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেন স্মিথ। এই জয়ে অ্যাশেজে ২-০তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
আর তাতে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয়। টেস্ট ইতিহাসের মাত্র একটি দলই পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর হেরেছে মাত্র একটি দলই। সেই দলটির নাম ইংল্যান্ড। ১৯৩৬–৩৭ মৌসুমের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ায় বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পরও ৩–২ ব্যবধানে হেরে যায় ইংলিশরা।
ব্রিসবেনে দিবারাত্রির এই টেস্টে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই দলের ফিল্ডিং। ইংল্যান্ড যেখানে প্রথম বোলিং ইনিংসে ৫টি ক্যাচ ছেড়েছে, সেখানে অস্ট্রেলিয়া একের পর এক দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছে।
আজ টেস্টের চতুর্থ দিনে বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকস জুটি যখন ম্যাচে ফেরার পথে ছিল, তখনো দুর্দান্ত দুই ক্যাচেই কাটা পড়েন জ্যাকস ও স্টোকস। ইনিংসে ৭০তম ওভারে মাইকেল নেসারের বলে স্লিপে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ এক ক্যাচে ৪১ রান করা জ্যাকসকে ফেরান স্মিথ। এরপর ফিফটি করা স্টোকসকে দারুণ ক্যাচ নেন অ্যালেক্স ক্যারি। শুধু এই ক্যাচটিই নয়! পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত কিপিং করেছেন ক্যারি।
কখনো স্কট বোল্যান্ড, কখনো নেসারের ঘণ্টায় ১৩০-১৩৫ কিলোমিটার গতির বলে প্রয়োজন হলেই স্টাম্পের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বলের অসমান বাউন্সও তাঁর হাত ফসকাতে পারেনি। স্টোকসের ক্যাচটিও তিনি নিয়েছেন শর্ট কিপিং করে। জ্যাকস-স্টোকসসহ নেসার দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট নিয়েছেন ৫টি। তৃতীয় টেস্ট খেলা নেসার ঘরের মাঠ ব্রিসবেনে পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট।
ঘরের মাঠে টানা ৬৯ টেস্ট খেলা নাথান লায়নকে বাদ দিয়ে নেসারকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। দুর্দান্ত বোলিংয়ে সব আলোচনা এখন নিশ্চয় থামবে!
আজ ৬ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। স্টোকস ও জ্যাকস দুজনেই দিন শুরু করেন ৪ রান নিয়ে। দুজনেই আজ সকালে খেলেন প্রথাগত টেস্ট ক্রিকেট, মানে রয়েসয়ে। প্রথম সেশনে তাতে উইকেটও হারায়নি তারা। সিরিজে প্রথমবারের মতো কোনো এক সেশনে উইকেট হারায়নি কোনো দল।
স্টোকস ও জ্যাকসের সপ্তম উইকেট জুটি থেকে এসেছে ২২১ বলে ৯৬ রান। এরপর ধস! ২২৪ রানে জ্যাকস ফিরলে পরের ৩ উইকেট যেতেও তাদের সময় লাগেনি। শেষ ৪ উইকেট ইংল্যান্ড হারিয়েছে ১৭ রানে। এর আগে গতকাল দিনের শেষদিকে ৩৮ রান তুলতে ৬ উইকেট হারায় স্টোকসের দল।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৫১১ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ফিফটি করেছেন ৫ জন। ওপেনার জ্যাক ওয়েদেরাল্ড (৭২), মারনাস লাবুশেন (৬৫), স্টিভ স্মিথ (৬১), অ্যালেক্স ক্যারি (৬৩) ও মিচেল স্টার্ক (৭৭)।
পার্থ টেস্টের পর ব্রিসবেনেও ম্যাচসেরা হয়েছেন স্টার্ক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৩৩৪ ও ৭৫.২ ওভারে ২৪১ (স্টোকস ৫০, ক্রলি ৪৪ ; নেসার ৫/৪২, বোল্যান্ড ২/৪৭, স্টার্ক ২/৬৪)।
অস্ট্রেলিয়া: ৫১১ ও ১০ ওভারে ৬৯/২ (স্মিথ ২৩*, ওয়েদেরাল্ড ১৭*; আটকিনসন ২/৪৭)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মিচেল স্টার্ক
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ২–০তে এগিয়ে

