চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ, চেলসির মাঠে আজ অতিথি বার্সেলোনা। কোনো সন্দেহ ছাড়াই এই টুর্নামেন্টে এ সপ্তাহের সবচেয়ে বড় লড়াই। ৪টা করে ম্যাচ শেষে দুই দলেরই পয়েন্ট সমান—৭। তবে গোল ব্যবধানে বার্সেলোনা (+৫) কিছুটা ভালো অবস্থানে চেলসির (+৩) চেয়ে। অবশ্য অপটা সুপারকম্পিউটার বলছে, আজ জয়ের সম্ভাবনায় সামান্য এগিয়ে চেলসি (৪১.৭%), বার্সেলোনার সম্ভাবনা ৩৪.৫%। কম্পিউটারের এমন ভবিষ্যদ্বাণীর কারণও আছে। বার্সেলোনা চেলসির বিপক্ষে সর্বশেষ ৯ ম্যাচে জিতেছে মাত্র একবার!
চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই দলই নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে হতাশ করেছে। চেলসি ৩-১ গোলে হারে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে, বার্সা ঘরের মাঠে পিএসজির কাছে পরাজিত হয় ২-১ গোলে। তবে ইংল্যান্ডে বার্সার সাম্প্রতিক রেকর্ড তাদের ভরসা জোগাতে পারে।
ইংল্যান্ডে সর্বশেষ ৯ ম্যাচে তারা হেরেছে মাত্র দুবার, জিতেছে ছয়বার। সেই দুই হার ছিল গার্দিওলার ম্যান সিটি (২০১৬, ৩–১) ও ক্লপের লিভারপুলের কাছে (২০১৯, ৪–০)। এই বার্সেলোনার রেকর্ড দুর্দান্ত, টানা ২৪ ম্যাচে গোল করেছে চ্যাম্পিয়নস লিগে, গোলসংখ্যা মোট ৬৭টি। যেটি এই মুহূর্তে ইউরোপে যেকোনো দলের মধ্যে টানা গোল করার দীর্ঘতম রেকর্ড।
পরিসংখ্যান আশা দেখাচ্ছে চেলসিকেও। চ্যাম্পিয়নস লিগে লা লিগার দলগুলোর বিপক্ষে ইংলিশ দলগুলো তাদের সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে ৯টিতেই জিতেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম বার্সার জয়—সেপ্টেম্বরে নিউক্যাসলের মাঠে ২–১। এর পর থেকে ইংলিশরা টানা চার ম্যাচে স্প্যানিশদের বিপক্ষে গোল না খেয়ে জিতেছে: আর্সেনাল ৪–০ আতলেতিকো, ম্যান সিটি ২–০ ভিয়ারিয়াল, লিভারপুল ১–০ রিয়াল মাদ্রিদ, নিউক্যাসল ২–০ বিলবাও।
নিউক্যাসলের বিপক্ষে বার্সেলোনার সেই জয়ের নায়ক ছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। করেছিলেন দুই গোল। এখন পর্যন্ত বার্সার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৪ ম্যাচে ৪ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট তাঁর। ক্লাবের ইতিহাসে চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম ৫ ম্যাচে তাঁর চেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন শুধু রিস্টো স্টইচকভ—১৯৯৪ সালে ৫ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট।
তবে লা লিগায় বার্সার সর্বশেষ ম্যাচে (৪–০, বিলবাও) অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি রাশফোর্ড। আজ ফিরতে পারেন। সে ম্যাচে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ছিলেন নিষেধাজ্ঞায়, যা চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রযোজ্য নয়। এ ছাড়া আলেহান্দ্রো বালদে চোটে পড়েছেন সঙ্গে গাভি, পেদ্রি, টের স্টেগেনও থাকছেন না।
চোটের সমস্যা আছে চেলসিতেও। কোল পালমার নেই। লেভি কলউইল, দারিও এসুগো, রোমিও লাভিয়াও বাইরে। চেলসির আশার নাম এস্তেভাও। এই কিশোর ফরোয়ার্ড চ্যাম্পিয়নস লিগে চলতি মৌসুমে চেলসির সর্বোচ্চ গোলদাতা, প্রথম দুই ম্যাচেই গোল করেছেন। এবার গোল করলে হবেন চ্যাম্পিয়ন লিগে প্রথম তিন ম্যাচেই গোল করা দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়। আজ তার বয়স ১৮ বছর ২১৫ দিন। এখন এই কীর্তিটা এমবাপ্পের (১৮ বছর ১১৩ দিন, মোনাকো, ২০১৭)।
চেলসি দলটাও তরুণ। গড় বয়স ২৩ বছর ২৭৮ দিন—এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। ২৩ বা তার কম বয়সী ১৪ জন খেলোয়াড়কে তারা এরই মধ্যে মাঠে নামিয়েছে। এই তরুনদের গতি, প্রাণশক্তি যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই দুশ্চিন্তার কারণ।
অভিজ্ঞতায় অবশ্য এগিয়ে বার্সা। আবার তারা এবার সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখেছে (১২), আটজন আলাদা খেলোয়াড় কার্ড দেখেছেন। মানে, প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামাতে তারা ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না।
স্টামফোর্ড ব্রিজ জয় করতে হলে আজও হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের কাউকে হয়তো এমন ঝুঁকি নিতেই হবে।

