জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন সানাই তাকাইচি

জাপানের প্রথম মহিলা নেতা হতে পারেন তাকাইচি চীনের তীব্র সমালোচক সানা তাকাইচি। তিনি জাপানের রাজনৈতিক বাজপাখি হিসেবে পরিচিত।

বৃহস্পতিবার তাকাইচি বলেছেন, তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

তিনি বলেছেন, এমনভাবে প্রচারণা চালাবেন যা তাকে জাপানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রতিযোগিতায় ফেভারিটদের মধ্যে দেখা যাওয়া তাকাইচির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জনপ্রিয় কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমির বিরুদ্ধে। তিনি শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তাদের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী ৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় পার্টিরুম ভোটে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান হিসেবে মধ্যপন্থী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হওয়া।

বৃহস্পতিবার তার প্রার্থিতা ঘোষণার সময় এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে তাকাইচি বলেন, “আমাদের এখন যা প্রয়োজন তা হলো এমন রাজনীতি যা মানুষের দৈনন্দিন জীবন এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগকে আশা ও স্বপ্নে রূপান্তরিত করতে পারে।”

তিনি বলেন, “এবং এটি শক্তিশালী রাজনীতিও যা জাপানের মুখোমুখি সংকট কাটিয়ে উঠবে।”

তাকাইচি (৬৪) একজন কট্টরপন্থী নেতা যিনি একটি রক্ষণশীল সামাজিক এজেন্ডা এবং শক্তিশালী জাতীয় প্রতিরক্ষা কর্মসূচির পক্ষে কথা বলেছেন।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নীতির প্রতিধ্বনি হিসেবে বিশাল সরকারি ব্যয় এবং কম সুদের হারকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

তিনি ইয়াসুকুনি মন্দিরেরও নিয়মিত দর্শনার্থী ছিলেন। এই মন্দিরে জাপানের যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদেরসহ নিহতদের প্রতি সম্মান জানায় এবং এশিয়ান দেশগুলো এটিকে জাপানের সামরিকবাদী অতীতের প্রতীক হিসেবে দেখে।

তিনি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিংয়ের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিপক্ষে সোচ্চার।

তাকাইচি অতীতে এলডিপি নেতৃত্বের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। গত বছর ইশিবার পরে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলীয় ভোটে তিনজন ব্যক্তি ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছেন- প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি।

নাগোয়া ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের এমেরিটাস অধ্যাপক জুনিচি তাকাসে বলেন, অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতায় কে জিতবে তাকে এই দৃষ্টিকোণ থেকে বেছে নেওয়া হবে যে, কে ‘এলডিপিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং নির্বাচনী জয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে’।

তাকাসে বলেন, এলডিপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো ‘পুরাতন দল হিসেবে স্বীকৃত এবং তরুণ ভোটারদের সমর্থন পেতে লড়াই করছে’। তাই এলডিপি সদস্যরা তাদের নির্দিষ্ট নীতির চেয়ে প্রার্থীর নির্বাচনী জ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাপানি সংবাদ সংস্থা জিজি প্রেসের মতামত জরিপে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য জনসাধারণের মধ্যে কোইজুমি শীর্ষ প্রার্থী, তাকাইচি প্রায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন যদি তারা বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে পর্যাপ্ত সমর্থন পান। যেটি আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় এমনকি শীর্ষ রাজনৈতিক আসন দখলের জন্য ও প্রয়োজনীয়।

গত বছর দু’টি জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ইশিবা চলতি মাসে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেওয়ার পর এলডিপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, আনাদোলু এজেন্সি, ফ্রান্স২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *