৭ ডিসে ২০২৫, রবি

টি–টোয়েন্টিতে কেমন গেল বাংলাদেশের ২০২৫ সাল

বিপিএল ভালো করা কারও কি বিশ্বকাপ দলে ঢোকার সুযোগ আছে? গত পরশু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দেননি অধিনায়ক লিটন দাস। কিন্তু তাঁর বিশ্বাস, ফেব্রুয়ারির বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দল প্রস্তুতই আছে। এ বছর খেলা ৩০ টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড ১৫ জয়ের পথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর এখন তাঁদের চোখ বিশ্বকাপে।

এ বছর আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে না বাংলাদেশ। বিপিএলের পরই ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের আগে দেখে নেওয়া যাক বছরটা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের কেমন কেটেছে।

ছক্কায় ছক্কায়

এ বছর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে ছক্কা মারার সামর্থ্যে। টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে এক শর বেশি ছক্কা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এর আগে একবারই মেরেছিলেন, ২০২৩ সালে তাঁদের ব্যাট থেকে এসেছিল ১২২ ছক্কা।

সেটিকে ছাড়িয়ে এ বছর তাঁরা গেছেন আরও অনেক দূরে। ২০২৫ সালে রেকর্ড ২০৬টি ছক্কা মেরেছেন। এত ছক্কা মারা প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের রান তোলার গতিতেও। বছরজুড়ে ১২৫.৯৭ স্ট্রাইক রেটে রান তুলেছেন তাঁরা, অন্তত ৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছেনএমন বছরগুলোর মধ্যে ব্যাটসম্যানদের এটিই সর্বোচ্চ রান তোলার গতি।

তানজিদ যেখানে আলাদা

গত বছরের মে মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তানজিদ হাসানের। পরের বছরটাতেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বেশ কয়েকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বছরজুড়ে ওপেনিংয়ে তিনি ভরসা হয়েছেন দলের জন্যও।

এবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কত বেশি ছক্কা মেরেছেন, তার একটি ধারণা পাওয়া যাবে একটা তালিকার দিকে তাকালেইএক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটা এত দিন ছিল জাকের আলীর। ২০২৪ সালে ২১টি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। অথচ এ বছর শেষে তিনি চলে গেছেন ৫ নম্বরে।

লিটন দাস (২৩), সাইফ হাসান (২৯), পারভেজ হোসেন (৩৪) নিজেদের নাম জাকেরের ওপরে তুলেছেন এ বছর। তাঁদের তিনজনকেও ছাড়িয়ে গেছেন ওপেনার তানজিদ হাসান, এ বছর ২৭ ইনিংসে ৪১ ছক্কা এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।

এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডটি এখন তাঁরই। শুধু ছক্কাই নয়, এই সংস্করণে এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানও এখন তাঁর। ২০২৫ সালে ২৭ ইনিংসে ১৩৫এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৭৭৫ রান করেছেন তানজিদ।

মিডলঅর্ডার দুশ্চিন্তা

ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারে কমবেশি ধারাবাহিকতা ছিল বছরজুড়েই। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা হয়ে থেকেছে মিডল অর্ডার। বিশ্বকাপে এসব জায়গায় কে খেলবেন, সেটিও এখনো স্পষ্ট নয়। বছরজুড়ে ঘুরিয়েফিরিয়ে জাকের আলী-শামীম হোসেন-তাওহিদ হৃদয়-নুরুল হাসানদের চেষ্টা করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে তাঁরা রান করলেও পুরোপুরি আস্থা জোগাতে পারেননি।

প্রায় পুরো বছর টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতে চারে নেমে পারভেজ হোসেনের ২৬ বলে ৩৪ রানের ইনিংসের পর এখন তাঁদের স্ট্রাইক রেট তৃতীয় সর্বনিম্ন। বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হতে পারে মিডল অর্ডারের ব্যাটিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *