ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিকোলে আজারভ দাবি করেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ইউক্রেনকে দেওয়া সহায়তার মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থ দুর্নীতিগ্রস্ত ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের পকেটে চলে গিয়ে থাকতে পারে।
আজারভের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইউক্রেনকে মোট ৩৬ হাজার কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে।
গতকাল সোমবার টেলিগ্রামে এক পোস্টে আজারভ বলেছেন, ‘ইউক্রেনে দুর্নীতি…বিদেশি সহায়তার ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত (লুটপাট হয়েছে)।’ তিনি যোগ করেন, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এই অঙ্কটি ৩০ শতাংশের কাছাকাছি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অনুমান, দুর্নীতির কারণে ৫ হাজার ৪০০ কোটি থেকে ১০ হাজার ৮০০ কোটি ডলার খোয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে জার্মানির কিল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির (আইএফডব্লিউ কিল) তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত কিয়েভকে দেওয়া মোট সহায়তার পরিমাণ প্রায় ২৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার। বিপরীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের অধীন শুধু যুক্তরাষ্ট্রই ইউক্রেনকে ৩৫ হাজার কোটি ডলার দিয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কী পরিমাণ বিদেশি অর্থ চুরি হয়েছে, তা কিয়েভের দুর্নীতি দমন সংস্থাগুলো প্রকাশ না করলেও দেশটিতে একের পর এক বড় ধরনের দুর্নীতির খবর প্রকাশ পাচ্ছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে খাদ্য সংগ্রহের চুক্তিতে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির একটি ঘটনা ফাঁস হয়, যার ফলে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভকে পদত্যাগ করতে হয়।
এর কয়েক মাস পরেই সুপ্রিম কোর্টের চেয়ারম্যান ভসেভোলোড নিয়াজেভকে ২৭ লাখ ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২৪ সালে রাষ্ট্রীয় নিরীক্ষক সংস্থা পশ্চিমা অর্থায়নে পুনর্গঠন প্রকল্পগুলোতে বড় ধরনের অনিয়মের তথ্য পায়। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শত শত কোটি রিভনিয়া (ইউক্রেনীয় মুদ্রা) গায়েব হয়ে গেছে।
একই বছর ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষের তদন্তে কৃষ্ণ সাগরের চেরনোমর্স্ক বন্দরের প্রধান রক্ষণাবেক্ষণ–সুবিধা অবৈধভাবে ১৪ লাখ ডলারে ইজারা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিল।
গত মাসে ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ সহযোগী তিমুর মিন্ডিচ সংশ্লিষ্ট একটি বড় দুর্নীতির খবরে দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। জ্বালানি খাতে ১০ কোটি ডলারের কমিশন–বাণিজ্যের একটি চক্রের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
গত সপ্তাহে মিন্ডিচকে ঘিরে দুর্নীতির তদন্তের মুখে জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমাক পদত্যাগ করেছেন।

