অবশেষে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও তাঁর সমর্থকেরা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রতিপক্ষ দল আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়কে কনুই মেরে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়ার শঙ্কায় ছিলেন রোনালদো। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ২০২৬ বিশ্বকাপে পর্তুগালের প্রথম দুই ম্যাচে খেলা হতো না রোনালদোর। কিন্তু গতকাল ফিফা জানিয়েছে তেমনটি হচ্ছে না।
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা একটি শৃঙ্খলাবিষয়ক রায় প্রকাশ করে, যেখানে আয়ারল্যান্ড ম্যাচে রোনালদোর কনুই মারাকে ‘সহিংস আচরণ’ বা ‘গুরুতর ফাউল’ হিসেবে বিবেচনা করে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা এক বছরের জন্য পর্যবেক্ষণমূলকভাবে স্থগিত রাখা হয়।
লাল কার্ড দেখায় রোনালদোকে বাধ্যতামূলকভাবে যে এক ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকার শাস্তি পেতে হতো, সেটি এরই মধ্যে কাটিয়েছেন। গত সপ্তাহে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে বাছাইপর্বে পর্তুগালের শেষ ম্যাচে খেলেননি রোনালদো। সে ম্যাচে ৯–১ গোলে জিতে সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করে পর্তুগাল।
আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আইরিশ ডিফেন্ডার ও’শেয়ারকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন রোনালদো। রেফারি গ্লেন নাইবার্গ এ ঘটনায় তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান। তবে ভিএআরে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণের পর রেফারি সিদ্ধান্ত পাল্টান, দেখান লাল কার্ড। রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলের অর্থ হচ্ছে, রেফারির কাছে ঘটনাটি গুরুতর মনে হয়েছে। পর্তুগালের জার্সিতে এটি ছিল রোনালদোর প্রথম লাল কার্ড।
এ ঘটনার পর নিয়ম অনুযায়ী রোনালদোর অন্তত দুই ম্যাচ, এমনকি তিন ম্যাচ পর্যন্ত নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল। ফলে রেকর্ড ষষ্ঠ বিশ্বকাপে খেলার পথটা তিনি বেঞ্চে বসেই শুরু করবেন—এমনটাই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ফিফার রায়ের পর সেই আশঙ্কা আর থাকল না।
ফিফা জানিয়েছে, তাদের শৃঙ্খলাবিধিতে এমন সুযোগ আছে, যেকোনো শাস্তির অংশকে পর্যবেক্ষণকাল বা ‘প্রবেশন’ হিসেবে রাখা যায়। তবে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে দুই ম্যাচ স্থগিত রাখা বেশ বিরল ঘটনাই। ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যদি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পর্যবেক্ষণকালে একই ধরনের এবং একই মাত্রার কোনো শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, তাহলে বাকি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।’
চলতি মাসে ফিফার বিচার করা দুটি ঘটনায় আর্মেনিয়া ও বুরুন্ডির দুই খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আক্রমণাত্মক আচরণের জন্য লাল কার্ড দেখায় তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এই দুই খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণকালের মাধ্যমে শাস্তি কমানো হয়নি।
ফিফার শৃঙ্খলাবিধি জাতীয় দলের ম্যাচগুলোয় প্রযোজ্য। আগামী মার্চে পর্তুগাল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। এরপর আগামী মে কিংবা জুনের শেষ দিকে একটি বা দুটি ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলবে। যুক্তরাস্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় আগামী ১১ জুন শুরু হবে বিশ্বকাপ।
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করেন রোনালদো। সেখানে একসঙ্গে তিনজন আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও অংশ নেন। এর ছয় দিন পর রোনালদোর বিষয়ে নিজেদের রায় জানাল ফিফা। রোনালদো তিন বছর ধরে সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসরে খেলছেন। এই ক্লাবের অধিকাংশ মালিকানা সৌদির সরকারি বিনিয়োগ তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (পিআইএফ)।

