অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার ও গায়ক এ আর রাহমানের শৈশবটা সুখের ছিল না। তখনকার স্মৃতি বলতে অর্থকষ্টে অনিশ্চিত সকাল, দরিদ্রতায় মানসিক চাপ। সম্প্রতি নিখিল কামাথের ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেড়ে ওঠার সময়কার ‘প্রতিদিনের ট্রমা’ বা মানসিক আঘাতের কথা শেয়ার করেছেন এ আর রাহমান। জানান, একটু সুখের আশায় তিনটি চাকরি করতেন তাঁর বাবা।
এদিন এ আর রাহমান স্মরণ করেন কীভাবে তীব্র আর্থিক অনিশ্চয়তা তাঁর শৈশবের বেশির ভাগ সময়কে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। মা–বাবাকে যেতে হয়েছিল চরম কষ্টের মধ্য দিয়ে। আর্থিক চাপের কারণে রাস্তায় নামতেও বাধ্য হতে হয়েছিলেন তাঁরা।
এ আর রাহমানের বাবা, সংগীতশিল্পী আর কে শেখর বিভিন্ন স্টুডিওতে কাজ করতেন। পরিবারের একটি স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করতেন। এ আর রাহমান বলেন, ‘বাবা একই সঙ্গে তিনটি কাজ করতেন, আর অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলেই তাঁর শরীর একদম ভেঙে পড়েছিল। ওটাই ছিল আমার শৈশবের অন্ধকার অধ্যায়, আর সেই মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে আমার অনেক সময় লেগেছিল।’
এ আর রাহমানের বয়স যখন মাত্র ৯ বছর, তখন তাঁর বাবা মারা যান। এরপর পরিবারের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। এ বয়সেই তাঁকে কাজের সন্ধানে নামতে হয়। মা ও ভাইবোনদের মুখে আহার জোগাতে স্টুডিওতে পারফর্ম, লোকাল ব্যান্ডে বাজানো এবং সুরকারদের সহকারী হিসেবে কাজ করা শুরু করেন তিনি। সে সময় নিয়ে এ আর রাহমান বলেন, ‘তখন সংগীতই আমার একমাত্র কাজ এবং ভরসা—উভয়ই হয়ে ওঠে।’
আজ এ আর রাহমান ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিশ্বস্বীকৃত সংগীতশিল্পী। তাঁর অর্জনের ঝুলিতে বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য কালজয়ী গানের সঙ্গে রয়েছে দুটি একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার) ও দুটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড। এত সাফল্যের পরেও তিনি স্বীকার করেন, সেই কষ্টের দিনগুলোতে তাঁর ধৈর্য আর সহ্যশক্তিই তাঁকে আজকের এই সফল জায়গায় নিয়ে এসেছে।

