ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর করার চিহ্ন। ফটক দিয়ে ঢুকতেই ক্যাম্পাস চত্বরে আগুনে পুড়ে যাওয়া তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেট কার দেখা যায়। প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষে আসবাব ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া জানলার কাচ, মূল ফটক ও সীমানা প্রাচীরের ভাঙা অংশ চোখে পড়ে। পুরো ক্যাম্পাস ফাঁকা, সুনসান নীরবতা। এই চিত্র আজ মঙ্গলবার সকালের; সাভারের বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটির।
গত রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত আশুলিয়ার খাগান এলাকার সিটি ইউনিভার্সিটির সঙ্গে একই এলাকার বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটিতে ভাঙচুর করেন। ওই ঘটনার পর গতকাল সকাল থেকে সিটি ইউনিভার্সিটির অনেক শিক্ষার্থী হল ছাড়তে শুরু করেন। পরে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার করে। প্রশাসনের নির্দেশে সন্ধ্যার মধ্যেই সব শিক্ষার্থী হল থেকে চলে যান।
আজ সকালে সিটি ইউনিভার্সিটির এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ‘গতকালই সবাই (শিক্ষার্থীরা) চলে গেছেন। এখন হল খালি। আমরা সবাই একটু ভয়ের মধ্যেই আছি।’
এদিকে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানার মামলা করাসহ তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।
সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীদের আচরণ শিক্ষার্থীসুলভ ছিল না। তাঁরা আমার কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। গাড়িগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আজ থানায় মামলা করব এবং ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগ জানাব।’
উপাচার্য লুৎফর রহমান আরও বলেন, অভ্যন্তরীণভাবে পুরো বিষয়টির তদন্ত করা হবে। এ ছাড়া উচ্চ পর্যায়ে একটি তদন্ত হবে। আমরাসহ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে সেই পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হবে। সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু শিক্ষাজীবন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ যদি আন্তরিক হয় এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়, তখন মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত রোববার সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী থুতু ফেললে অসতর্কবশত সেখানে উপস্থিত ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালান।

