৭ ডিসে ২০২৫, রবি

স্বাস্থ্যগুণে কোনটি এগিয়ে, মুগ নাকি মসুর

ডালের মতো উপকারী খাবার খুব কমই আছে। দাম কম হওয়ায় এটি প্রোটিনের যোগানদাতা হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে। প্রোটিনের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটও পাওয়া যায় ডালে। আর এটি তাড়াতাড়ি শরীরে এনার্জির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই তো আমাদের মতো নিম্ন আয়ের দেশে ডালের এত জনপ্রিয়তা।

তবে এই উপকারী এক খাবার নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। আর এসব বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে মুগ ও মসুরের দ্বন্দ্ব। এই দুই ধরনের ডালের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী, এই বিষয়টি নিয়ে মাঝেমাঝেই তর্ক-বিতর্ক লাগে পরিচিতজনদের মধ্যে। তাই সবার মনের এই প্রশ্ন নিয়েই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—

মসুর ডালের গুণ

পুষ্টিবিদদের কথায়, মসুর ডালের যতই প্রশংসা করা হোক না কেন, তা যথেষ্ট হবে না। কারণ এই ডালে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন। এ ছাড়া এই ডাল সহজে হজমও করা যায়। তাই নিয়মিত মসুর ডাল খেলে ঠকবেন না।

এক কাপ ভাঙা মসুর ডাল খেলে ১৮০ ক্যালরি, ১০ গ্রাম প্রোটিন ও ৬ গ্রাম ফাইবার মিলবে। অপরদিকে ১ কাপ গোটা মসুর থেকে ১২০ ক্যালরি, ১৪ গ্রাম প্রোটিন ও ৮ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়।

​মুগ ডালের গুণ

গুণের বিচারে কম যায় না মুগ ডালও। এতেও রয়েছে একাধিক উপকারী উপাদান। তাই নিয়মিত মুগ ডাল পাতে রাখলেও অচিরেই স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে বলেই জানালেন পুষ্টিবিদরা। সাধারণত তিন ধরনের মুগ ডাল হয়, যথা- হলুদ মুগ, ভাঙা সবুজ মুগ ও গোটা সবুজ মুগ।

মুগ ডালের মধ্যে গোটা সবুজ মুগ ও হলুদ মুগই বেশি উপকারী। কারণ এক কাপ গোটা সবুজ মুগ থেকে ২৩৬ ক্যালরি, ১৬ গ্রাম প্রোটিন ও ১৬ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। অপরদিকে সমপরিমাণ হলুদ মুগ থেকে মেলে ১৪৭ ক্যালরি, ২৫ গ্রাম প্রোটিন ও ১২ গ্রাম ফাইবার।

এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো যে, মুগ ডাল খুব দ্রুত রান্না করা যায়। বিশেষ করে, প্রেশার কুকারে তো মাত্র ৫ মিনিটেই রান্না করতে পারেন এই ডাল।

​মসুর না মুগ, কোনটা খেলে ফিরবে স্বাস্থ্যের হাল​

মুগ ও মসুর দুই ডালের নিউট্রিশন ভ্যালু কিন্তু প্রায় কাছাকাছি। তাই গুণের বিচারে এই দুই ডালের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নেওয়া সম্ভব নয়। বরং এই দুটি ডাল মিলিয়ে মিশিয়ে খেলেই দেহে কার্ব ও প্রোটিনের চাহিদা মিটে যাবে। এমনকি ঘাতক এলডিএল কোলেস্টেরল কমানোর কাজেও এদের জুড়ি মেলা ভার।

এ ছাড়া এই দুই ধরনের ডালে ফ্যাটও প্রায় অনুপস্থিত। তাই আপনার ওয়েট লস ডায়েটেও অনায়াসে জায়গা করে নিতে পারে মুগ আর মসুর।

বেশি তেল, মসলা নয়

অনেকেই ডাল রান্নার সময়ও অত্যধিক পরিমাণে তেল, মসলা ব্যবহার করেন। এই কারণেই ডালের পুষ্টিগুণ বহুগুণে কমে যায়। তাই ডালে তেল, মসলা ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়মটা মেনে চললেই আপনার দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে। এমনকি রোগব্যাধির করাল গ্রাসে পড়ার আশঙ্কাও কমবে।

অন্য প্রোটিনও খান​

একটা কথা মনে রাখা জরুরি, শুধু ডাল খেয়ে কিন্তু দেহে প্রেটিনের ঘাটতি মিটিয়ে ফেলতে পারবেন না। বরং সুস্থ থাকতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ডিম, মাছ, মাংস, সয়াবিনসহ অন্যান্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। তাহলেই দেহের প্রোটিনের অভাব মেটাতে পারবেন।

তাই সুস্থ-সবল নীরোগ জীবন কাটাতে প্রাণিজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন মিলিয়ে মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাতেই মিলবে সুফল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *