৭ ডিসে ২০২৫, রবি

৭ কলেজ বন্ধ করে অনুমাননির্ভর কোর্স চালু করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়’

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ বন্ধ করে পরীক্ষামূলক বা অনুমাননির্ভর কোর্স চালু করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে মনে করে ‘বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ’।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিমত দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কারের বাইরেও একটি বিষয় নিয়ে আজ আমাদের কথা বলতে হচ্ছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দেখভাল করার লক্ষ্যে ১৯৮০ সালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার গঠিত হলেও শিক্ষা বিষয়ের নীতিনির্ধারণে তাদের কোথাও রাখা হয় না। ফলে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরে এসেও দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই অসন্তোষ দেখা যায়। দেশের প্রবীণ নাগরিক হিসেবে এ বিষয়ে আমাদের কথা বলা দরকার বলে মনে করি, কেননা শিক্ষাই হচ্ছে একটি দেশের সব উন্নয়নের চাবিকাঠি।

তারা বলেন, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ নিয়ে শিক্ষা খাতে নতুন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ সাতটি কলেজসহ সারা দেশের সব কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। কোনো ধরনের স্টাডি ছাড়াই কেবলমাত্র ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল।

‘শিক্ষার্থীরা প্রথমে খুশি হলেও কিছুদিনের মধ্যে অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অবহেলার অভিযোগ উত্থাপন করে আন্দোলন শুরু করেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে সমাধানের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে, যেখানে শিক্ষা ক্যাডারের কাউকে রাখা হয়নি। মূল স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) এড়িয়ে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করায় সমস্যা আরো ঘনীভূত হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। কেউ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, কেউ বিপক্ষে। এছাড়া একটি মহল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লোভ দেখিয়ে নিজেদের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন বলেও শোনা যায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের উন্নয়নে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক সমুন্নত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশসেরা কলেজগুলো বন্ধ করে অনুমান-নির্ভর যা পরীক্ষামূলক কোর্স পরিচালনা সঠিক নয়। এক্ষেত্রে গণভোটে নয়, শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের আলোকে এবং অংশীজনদের মতামতকে গুরত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষ সাত কলেজ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এবং বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি স ম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এম এ সামাদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *