চকবাজারের সুস্বাদু বাহারি ইফতার


জাতীয় কণ্ঠ ডেস্ক প্রকাশের সময় : মার্চ ২৫, ২০২৩, ৮:৫২ অপরাহ্ন /
চকবাজারের সুস্বাদু বাহারি ইফতার
নিউজটি শেয়ার করুন

কাবাব, কোফতা, রোস্ট, পরোটা। রয়েছে তন্দুরি, ফুলুরি, পেঁয়াজু, বেগুনি ও হালুয়ার রকমারি আইটেম। কী নেই চকবাজারের বাহারি ইফতার বাজারে! গতকাল শুক্রবার রমজানের প্রথম দিনে পুরান ঢাকার চকবাজার মসজিদের সামনের সড়ক ভরে উঠেছে শত শত সুস্বাদু ইফতারির আইটেমে। বিক্রির আশায় খাবারের পসরা সাজিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় ক্রেতাদের। সেখানকার ইফতারির স্বাদ নিতে ভিড় করেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভোজনবিলাসীরা। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জটলা আরও বড় হয়।

ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার জমে উঠলেও দাম শুনে নাখোশ ক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে উপচে পড়া ভিড় আছে, কিন্তু ক্রেতা অনেক কম। এবার ইফতারির আইটেমের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

মিরপুর থেকে আসা ক্রেতা রিয়াজ হোসেন জানান, তিনি কোয়েল পাখির রোস্ট, ছোলা, পেঁয়াজু ও জিলাপি কিনেছেন। সবকিছুর দামই বাড়তি।

বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, জালি কাবাব গতবার বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকায়, এবার ৩০ টাকা। রোল গতবার ২০ টাকায়, এবার ২৫ টাকা। দই বড়া গতবার ১০০ টাকায়, এবার ১২০ টাকা। ফালুদা গতবার ছিল ৮০ টাকা, এবার ১২০ টাকা।

পুরান ঢাকার ইফতারের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। এবারও চকবাজারের ইফতারির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বিশেষ এই পণ্য। বড় বাপের পোলায় খায় কিনতে ক্রেতাদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এই ইফতার আইটেম তৈরিতে ব্যবহার করা হয় মাংসের কিমা, সুতি কাবাব, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা-শুকনো মরিচসহ নানা পদের মসলা। এই খাবার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। গত রমজানে বড় বাপের পোলায় খায় বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে।

বিক্রেতা মো. রাসেল বলেন, বড় বাপের পোলায় খায় বিক্রিতে ভালোই সাড়া পাচ্ছি।

লালবাগের বাসিন্দা ফারুক হোসেন চকবাজারে এসেছেন বড় বাপের পোলায় খায় কিনতে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে চকবাজারের ইফতারের আকর্ষণই বড় বাপের পোলায় খায়।’

এদিকে অভিজাত ক্রেতাদের ইফতার বাজার হিসেবে পরিচিত বেইলি রোডে দাম বেশ চড়া বলে জানা গেছে। বেইলি রোডের ফখরুদ্দীন বিরিয়ানি থেকে ইফতারি ও রাতের খাবার কিনেছেন রাসেল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ইফতারির জন্য হালিম আর রাতে খাওয়ার জন্য গরুর কাচ্চি কিনেছি। তবে দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি।’ নবাব ভোজের বিক্রয়কর্মী আব্দুল হালিম বলেন, ইফতারির মূল্যতালিকা তৈরি করে তাঁরা বিভিন্ন খাবার বিক্রি করেন।

এ ছাড়া চকবাজার, কারওয়ান বাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন অলিগলিতে খোলা জায়গায় ইফতারসামগ্রী রাখায় পড়ছে ধুলাবালি। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, খোলা জায়গায় ইফতারি রাখলে স্বাভাবিকভাবেই ধুলাময়লা মেশে। এসব খেলে পেটের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তিনি বলেন, রোজা রাখার পর এই খাবার খেলে স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি তৈরি হবে। ইফতারি হতে হবে স্বাস্থ্যকর—এ বিষয়ে সবার খেয়াল রাখতে হবে।