কদিন ধরেই বাতাসে শীতের আমেজ। পৌষ আসতে আর দেরি নেই। আর শীতকালই মধু খাওয়ার সেরা সময়। কারণ, মধু আমাদের দেহের তাপ ধরে রাখতে সহায়তা করে। মধু স্বাস্থ্যকর। তবে কতটা মধু কার জন্য ভালো, তা জানা থাকা প্রয়োজন।
মধু থেকে আপনি যে কেবল উষ্ণতা পাবেন তা নয়, মধু আরও নানাভাবে সুস্থতার সহায়ক।
মধুতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান। তাতে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।
শরীরকে ভেতর থেকে তরুণ রাখতেও চাই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ত্বকের স্বাভাবিক কোমলতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে এ ধরনের উপাদান।
ঠান্ডা-কাশির সমস্যা উপশমেও সাহায্য করে মধু।
মধু খেলে দ্রুত শক্তি মেলে। কারণ, মধু খাওয়ার পর দ্রুত তা হজম হয় এবং তাতে থাকা শর্করা দ্রুত পৌঁছে যায় রক্তে।
১ চা-চামচ মধু থেকে প্রায় ২১ ক্যালরি পাওয়া যায়। তা ছাড়া এতে আছে পটাশিয়াম, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
যেভাবে খেতে পারেন মধু
নানাভাবেই খেতে পারেন মধু। কেউ কেউ চিতই পিঠা, ম্যাড়া পিঠা, রুটি বা পাউরুটির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান। তাতে স্বাদ বাড়লেও ক্যালরির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের শর্করা–জাতীয় খাবারের সঙ্গে মধু যোগ না করাই ভালো।
টক ফল বা এসবের রস মধু দিয়ে খেতে পারেন। নানা রকম সালাদের ড্রেসিং তৈরির কাজেও মধু ব্যবহার করতে পারেন।
লেবুর রস আর মধু দিয়ে পানীয় তৈরি করতে পারেন। কিংবা কমলার কোয়া হাত দিয়ে চটকে তাতে আদার রস আর মধু মিশিয়ে পানীয় তৈরি করতে পারেন। এ ধরনের পানীয় ঠান্ডা-কাশিতে উপকারী।
রং চা, লেবু–চা বা গ্রিন টিতেও যোগ করতে পারেন সামান্য মধু। তবে দুধ–চায়ে মধু মেশাবেন না।
ওটসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
মাছ বা মুরগির যেসব পদ একটু মিষ্টি স্বাদের হয়, সেগুলো রান্নার সময় চিনির বিকল্প হিসেবে মধু দিতে পারেন। দেশি ধারার রান্নায় অবশ্য এমন সুযোগ কম।কখন খাবেন, কতটা খাবেন
রাতে নয়, সকালের দিকে মধু খাওয়া ভালো। তবে সারা দিনে আধা চা-চামচ থেকে এক চা-চামচ মধু খাওয়াই যথেষ্ট।
অতিরিক্ত মধু খেলে রক্তে শর্করা ও ট্রাইগ্লিসারাইড নামের চর্বির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
কখনোই একবারে খুব বেশি পরিমাণে মধু খেতে নেই। এতে হজমের গন্ডগোল হতে পারে। হতে পারে অ্যাসিডিটির সমস্যা।
সারা দিনে কতটা মধু খাচ্ছেন, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। সারা দিনে একজন ব্যক্তির প্রয়োজনীয় ক্যালরির অধিকাংশই গ্রহণ করা উচিত এমন খাবার থেকে, যা হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে।
আরও খেয়াল রাখতে হবে, রোজকার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরি যাতে গ্রহণ করা না হয়।
শিশুদেরও খুব বেশি মধু দিতে নেই। অতিরিক্ত মধু বা চিনি খেলে ওরা সাময়িকভাবে অতিচঞ্চল হয়ে উঠতে পারে।
মধুতে কারও অ্যালার্জি থাকলে অল্প পরিমাণেও খাওয়া উচিত নয়। সাধারণত অর্গানিক মধুতে অ্যালার্জিজনিত সমস্যার ঝুঁকি বেশি থাকে।
ডায়াবেটিস বা ফ্যাটিলিভারে আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা যাঁদের রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে মধুর ব্যাপারে সতর্কতা প্রয়োজন।

