চাঁদকে আমরা এখন ধূসর, জনমানবহীন ও পাথুরে এক উপগ্রহ হিসেবে দেখি। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের অতীত চিত্র ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের ধারণা, কয়েক শ কোটি বছর আগে চাঁদে শুধু বরফই ছিল না। সেখানে আকাশ থেকে হয়তো তুষারপাত হতো ।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদ যখন সদ্য তৈরি হয়েছিল, তখন এটি পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি ছিল। সেই নৈকট্যের কারণে পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে একটি শক্তিশালী চৌম্বক সম্পর্ক তৈরি হয়। ধারণা করা হয়, ওই সময় চাঁদও পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের অংশের মতো আচরণ করত। এই যৌথ চৌম্বকীয় রক্ষাকবচ চাঁদকে ক্ষতিকারক সৌরবায়ু থেকে বাঁচাত।
এ অবস্থায় চাঁদ তার নিজের একটি ঘন বায়ুমণ্ডল ধরে রাখতে সক্ষম হয়। গবেষকদের মতে, ওই বায়ুমণ্ডল মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ঘন ছিল। ফলে সেই পরিবেশে জলীয় বাষ্প ও কার্বন ডাই–অক্সাইড জমা থাকতে পারত। এসব গ্যাস জমা হওয়ার অর্থ হলো—তাপমাত্রা কমে গেলে সেখানে বরফ জমার পাশাপাশি তুষারপাতও ঘটতে পারত।
আধুনিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাঁদের মেরু এলাকায় এখনও বরফের বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে। তাই বিজ্ঞানীরা মনে করেন, চাঁদের অতীতে বরফ–তুষারসম্পন্ন একটি ‘শীতল পরিবেশ’ ছিল—যা সময়ের সঙ্গে বিলীন হয়েছে।
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, চাঁদের প্রাচীন বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইড ও জলীয় বরফের তুষারপাত হওয়া একেবারে অসম্ভব ছিল না। বিজ্ঞানীরা এখন সেই সময়কার পরিবেশ ও তাপমাত্রা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছেন, যাতে চাঁদের অতীত ইতিহাস আরও পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।

