৭ ডিসে ২০২৫, রবি

নেপালে আবার উত্তেজনা , সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী সুশীলার

নেপালে আবারও নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। গত সেপ্টেম্বরে যে রক্তাক্ত ‘জেন জি’ বিক্ষোভের জেরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার উৎখাত হয়েছিল।

সেই ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গেই বৃহস্পতিবার সংঘর্ষে জড়াল ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল)-এর সমর্থকরা। এই সংঘর্ষের ফলে নেপালের বারা জেলার সেমরায় নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের ঘটনায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি।

কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সেপ্টেম্বরে নেপালে প্রাণঘাতী গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। ‘জেন জি’ নামে পরিচিত তরুণদের নেতৃত্বাধীন এ অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ও তার সরকার  ক্ষমতা হারায়।  গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বরে এ বিক্ষোভে অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল)-এর সমর্থক এবং ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীরা গতকাল বুধবার সিমারায় পৃথক সমাবেশ করে। এতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়।

আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, কাঠমাণ্ডু থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বারা জেলার সিমারা শহরে প্রতিদ্বন্দ্বী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের একদিন পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি সেপ্টেম্বরে অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন হবে।

বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি সব পক্ষকে শান্ত থাকার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে কার্কি বলেন, আমি স্বরাষ্ট্র প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বোচ্চ সংযম ও প্রস্তুতির সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমি সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত ও ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে চাই।

কার্কি বুধবার ১১০টিরও বেশি দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। বৈঠকে তিনি বলেন, আমরা চাই এই দেশ নতুন প্রজন্মের হাতে থাকুক এবং দুরদর্শী মানুষের দ্বারা পরিচালিত হোক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেপ্টেম্বরের অভ্যুত্থানে দেশটির অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৩ কোটি মানুষের দেশটি অস্থিরতার দিকে ধাবিত হয়। সংসদ, আদালত ও সরকারি অফিসগুলোতে আগুন দেওয়া হয় এবং একপর্যায়ে চারবারের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (৭৩) ক্ষমতাচ্যুত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *