৭ ডিসে ২০২৫, রবি

মালয়েশিয়ায় পাচারের শিকার গৃহকর্মী ১৬ বছর পর উদ্ধার

মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গরের বাতু কেভস এলাকায় প্রায় ১৬ বছর ধরে নিপীড়নের শিকার হয়ে হতাশা ও নিঃসঙ্গতার মধ্যে দিন কাটানো এক ইন্দোনেশীয় গৃহকর্মীকে অবশেষে উদ্ধার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। সোমবার (২৪ নভেম্বর) পরিচালিত বিশেষ অভিযানে তাকে একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।

ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান জানান, ৫৬ বছর বয়সি এ নারীকে তারা যখন খুঁজছিলেন, তখন তিনি নিয়োগকর্তার নির্দেশে একটি গাড়ির নিচে লুকিয়ে ছিলেনকর্তৃপক্ষ যেন তাকে খুঁজে না পায়। দীর্ঘদিনের ভয় আর আতঙ্ক তাকে এমন অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জানা যায়, প্রায় ১৬ বছর ধরে তিনি বৈধ কোনো নথি ছাড়া গৃহকর্মীর কাজ করতেন। প্রতি মাসে ৬০০ রিঙ্গিত বেতনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও গত দুই বছর তিনি এক টাকাও পাননি। শুধু আর্থিক শোষণই নয়, নিয়মিত বকাঝকা আর শারীরিক নির্যাতনের মধ্যেও তাকে দিন কাটাতে হতো।

তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। নিজস্ব পাসপোর্ট নিজের কাছে রাখতে পারতেন না, মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল, এমনকি পরিবারের সঙ্গেও তার যোগাযোগের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বিশ্রাম বা ঘুমের সময় মেলাতেন সুযোগ বুঝেযখন কেউ খেয়াল করত না।

অভিযান শেষে ৫১ বছর বয়সি এক স্থানীয় পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন যে ওই নারী তার নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে তার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন।

ঘটনাটি বর্তমানে অ্যান্টি-ট্র্যাফিকিং ইন পারসন্স অ্যান্ড অ্যান্টি-স্মাগলিং অব মাইগ্র্যান্টস অ্যাক্ট ২০০৭ (ATIPSOM Act 670)এর আওতায় তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযান পরিচালনায় ইমিগ্রেশনের ATIPSOM প্রতিরোধ বিভাগ ও অর্থপাচারবিরোধী তদন্ত দল অংশ নেয়। মানবপাচারের শিকার শনাক্তে ‘ন্যাশনাল গাইডলাইন অন হিউম্যান ট্রাফিকিং ইনডিকেটরস ২.০’ ব্যবহার করা হয়।

মানবিক এই উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে জাকারিয়া বলেন, মানবপাচার সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য তারা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণকে বিদেশি শ্রমিক বা গৃহকর্মীদের শোষণ সংক্রান্ত এই নাম্বারে ০৩-৮৮৮০১৪৭১ অথবা ই-মেইলে (urusetia_p@imi.gov.my) তথ্য দিতে আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *