৭ ডিসে ২০২৫, রবি

তাহাজ্জুদ নামাজের সঠিক নিয়ম

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিনৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম তাহাজ্জুদপাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর শ্রেষ্ঠ নামাজও এটিমহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের (তাহাজ্জুদের) নামাজ।’ (মুসলিম: ১১৬৩)

রাতের শেষভাগে যে নামাজ আদায় করা হয়, সেটিই মূলত তাহাজ্জুদ। তাহাজ্জুদ একটি নফল ইবাদত। তাহাজ্জুদ নেককার ও উত্তম বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। প্রকৃত মুমিন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গুরুত্বের সঙ্গে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। তাহাজ্জুদ আদায়কারীর প্রশংসায় আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন-

تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ عَنِ الۡمَضَاجِعِ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا

তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশঙ্কায়..।’ (সুরা সাজদা: ১৬)

প্রিয়নবী (সা.) জীবনে কখনও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ত্যাগ করেননি। তবে উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এটি সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা বা নফল। অর্থাৎ এ নামাজ আদায় করলে অশেষ পুণ্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, কিন্তু আদায় করতে না পারলে কোনো গুনাহ হবে না।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

সুরা ফাতেহার পর যেকোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। প্রিয়নবী (স.) যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদার সঙ্গে একান্ত নিবিষ্ট মনে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম। কেরাত উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

দুই দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে হয়। দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নিয়ত করার পর তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবর’ বলে নিয়ত বেঁধে সাধারণ নফল নামাজের মতোই ছানা, সুরা ফাতেহা এবং অন্য সুরা মিলিয়ে এই নামাজ পড়তে হয়। রুকু, সেজদা, তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানো পর্যন্ত সবকিছুই অন্য নফল নামাজের মতোই।

এভাবে দুই রাকাআত করে আট রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। যদি এশার নামাজের পরে বিতরের নামাজ পড়ে থাকেন, তবে তাহাজ্জুদ নামাজশেষে বিতর পড়ার দরকার নেই

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

নিয়ত মনের ব্যাপার। তাই মনে মনে দুই রাকাত তাহাজ্জুদের সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যায়। নির্দিষ্ট শব্দগুচ্ছ উচ্চারণের মাধ্যমে নিয়ত করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে আরবিতে এভাবে করা যায়

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ رَكَعَتِى التَّهَجُّدِ – اَللهُ اَكْبَر

উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতুয়ান উছাল্লিয়া রাকআতিত্তাহাজ্জুদি আল্লাহু আকবর।’

বাংলায়: দুই রাকাআত তাহাজ্জুদের নিয়ত করছি.. অতঃপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ শুরু করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *