বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস পরিস্থিতি দ্রুতই উদ্বেগজনক আকার ধারণ করছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) প্রকাশিত সর্বশেষ অ্যাটলাসে দেখা গেছে, বিশ্বের প্রতিটি ৯ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী এমন রোগীর সংখ্যা এখন ৫৮৯ মিলিয়ন, যার মধ্যে প্রায় ২৫২ মিলিয়নের রোগই এখনো নির্ণীত হয়নি। ফলে অজান্তেই গুরুতর জটিলতার ঝুঁকিতে রয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের যেসব দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার তালিকার শীর্ষে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, মিশর, ইরান, ফিলিপাইন ও সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশ। এসব দেশেই দ্রুত বাড়ছে রোগী ও চিকিৎসা ব্যয়ের চাপ। যা দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
আইডিএফের ২০২৫ সালের আগস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছর বিশ্বে ডায়াবেটিসে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ! অর্থাৎ প্রতি ৯ সেকেন্ডে একজন মানুষ এ রোগে প্রাণ হারাচ্ছেন। গত ১৭ বছরে ডায়াবেটিসজনিত স্বাস্থ্য ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৃদ্ধির হার ৩৩৮ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যয়ের বোঝা সবচেয়ে বেশি চাপ ফেলছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। যেখানে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ও প্রাথমিক শনাক্তকরণ ব্যবস্থার ঘাটতি সবচেয়ে প্রকট।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে ৮৫৩ মিলিয়নে পৌঁছাবে। এর ৮১ শতাংশই থাকবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন, নগরায়ন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা এবং শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে বিশেষভাবে বাড়ছে টাইপ-২ ডায়বেটিসের প্রকোপ, যা সাধারণত অতিরিক্ততার রোগ হিসেবেই পরিচিত।
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই জোর দিতে হবে প্রতিরোধ, সময়মতো রোগ শনাক্তকরণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নিয়মিত স্ক্রিনিং জরুরি হয়ে উঠেছে।
সূত্র: গালফ নিউজ

