বিশিষ্ট কবি ও পশ্চিমবঙ্গ কবিতা একাডেমির চেয়ারম্যান সুবোধ সরকার বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা কোনোদিন শেষ হয়ে যাবে না। কারণ, পাশেই আছে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ভারতের মতো এত ভাষাভাষীর দেশে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার কী হবে? কিন্তু আমি বলব, বাংলাদেশের মতো একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাকার কারণে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা কোনোদিন শেষ হয়ে যাবে না। যেমনভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঘ এসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃষ্টি দিয়ে যায় বা তার উল্টোটা হয়, ঠিক সেভাবেই একটা সাংস্কৃতিক ঢেউ সর্বক্ষণ আছড়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতার ওপর। এই ঢেউ কেউ কোনোদিন বন্ধ করে দিতে পারবে না। কোনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেই যে এটা বন্ধ করে দিতে পারে। ভাষা তার নিজের প্রয়োজনে নিজের ঢেউ তৈরি করে নিতে পারে। সাহিত্য তার নিজের প্রয়োজনে এপারে ছুটে আসবে আবার ওপারে ছুটে যাবে। যেভাবে এপারে একটা ভালো গান তৈরি হলে তা ওপারে ছুটে যায়, তেমনি বাংলাদেশের একটা ভালো কবিতা তৈরি হলে তার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় পৌঁছে যায়।’
শনিবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ অনুষ্ঠানে ‘সংযোগের সেতুবন্ধন: সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই মন্তব্য করেন সুবোধ।
এদিন সন্ধ্যায় বইমেলা প্রাঙ্গণের এস.বি.আই অডিটরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন ‘সেতু জোর করে তৈরি হয় না। এটা হাওড়া ব্রিজ বা পদ্মা সেতু নয় যেখানে অনেক পয়সা লাগে, অনেক লোক লাগে। সেতুটা আমাদের মধ্যেই আছে, নতুন করে সেতু তৈরি করতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘কলকাতা বইমেলা এমন একটি বইমেলা যেখানে বাংলাদেশ ছাড়া কোনোদিন এই বইমেলা হয়নি, কোনোদিন হবেও না। আজকের দর্শকরাও যে টানে এখানে ছুটে এসেছেন, তার পেছনেও রয়েছে সেই বাংলা ভাষার প্রতি টান।’
উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি এই বইমেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এবারের বই মেলার ফোকাল কান্ট্রি গ্রেট ব্রিটেন। এই বইমেলা চলবে আগামী ৩১ তারিখ পর্যন্ত। প্রতিদিন বইমেলা খোলা থাকবে দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
এদিকে, ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঅধরা মানবিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত রিকশা এবং রিকশাচিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ৩,২০০ বর্গ ফুটের এই প্যাভিলিয়নে মোট ৪৫ টি (১২টি সরকারি ও ৩৩টি বেসরকারি) স্টল আছে।
আপনার মতামত লিখুন :