অর্নব রায় ,নকলা প্রতিনিধি : শিক্ষাজীবনের বড় স্বীকৃতি হল শিক্ষার্থীর একাডেমিক ফলাফল। একজন শিক্ষার্থী তার দায়িত্বে কতটা মনোযোগী তা প্রমাণ করার একটা প্রক্রিয়া হলো ফলাফল। একজন মনোযোগী, দায়িত্বশীল ও কর্মমুখী শিক্ষার্থী হিসেবে নকলার মেয়ে বিলকিস সন্মানিত হয়েছেন কলকাতার বুকে।
গত ৮ই মে সোমবার কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ৪৫ তম সমাবর্তনে সবার সেরা হওয়ার সন্মাননা পেলেন নকলার গর্বিত কন্যা বিলকিস। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেরপুর জেলার নকলার কূর্শাবাদাগৈর গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেন মীর ও মরিয়ম বেগম এর গর্বিত মেয়ে বিলকিস মীর ২০১২ সালে চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হয়ে অনার্স (সম্মান) ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে নাটকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য মেধা তালিকায় স্কলারশিপ নিয়ে ভারতের কলকাতায় রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগে মাস্টার্স করার সুযোগ পান। সেখানেও তিনি রেখেছেন তার মেধার সাক্ষর। প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হয়ে উত্তীর্ণ হয়ে এসেছেন প্রথম সেমিস্টার থেকেই। সর্বোপরি নাটক বিভাগে সার্বিকভাবে প্রথম হয়েছেন।
আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যেক বছর প্রতি বিভাগের প্রথম শ্রেনীতে প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয় মেডেল ও অর্জিত বিভিন্ন পুরস্কার। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের সমাবর্তন মঞ্চে বিলকিস মীর পেয়েছেন একাডেমিক গোল্ড মেডেলসহ সন্তোষ সিনহা মেমোরিয়াল পুরস্কার, ধ্রুবপদ বন্দ্যেপাধ্যায় মেমোরিয়াল পুরস্কার ও নিরোদবরণ মেমোরিয়াল পুরস্কার।
দেশের বাইরে গিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে সম্মানিত করার মাধ্যমে বিলকিস মীর নকলার উচ্চশিক্ষা কামী শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি সন্তানকে সঠিকভাবে পড়াশোনার পরিবেশ করে দিলে তারা লক্ষ্য পূরণে সফল হওয়া যায়, একথারও একটা প্রমাণ রেখেছেন। বিলকিস মীরের বাবা এবং তাঁর ফুপু মোছাঃ নুরজাহান বেগম শত বাধা উপেক্ষা করে নিজের সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার সপ্ন পূরণে নিজেদেরকে গর্বিত বলে মনে করছেন। বিলকিস মীরের অভিভাবক বলেন, ছেলে হোক বা মেয়ে হোক প্রত্যেক পরিবারের উচিত নিজের সন্তানদের একটা পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। তাহলেই তারা তাদের আপন মেধায় বিকশিত হতে পারবে।
বিলকিস মীর নিজের সাফল্য অর্জনে জানান যে “আমি আনন্দিত এজন্য যে, আমি নকলার প্রাকৃতিক পরিবেশে হেসে খেলে বড় হতে পেরেছি এবং আমার পরিবারের মতো প্রগতিশীল একটি পরিবার পেয়েছি। নাটক বিষয়ে পড়াশুনার জন্য আমার পরিবারকে সবসময়ই মানুষের কটু কথা শুনতে হয়েছে অথচ আমার পরিবার আমাকে বলতেন, পড়াশুনা সবসময়ই সমান। তারা সবসময় আমার পাশে ছিলেন।তাঁদের এই সহযোগিতায় আজ আমি এখানে পৌঁছাতে পেরেছি। আমি আমার পঠিত বিষয় নিয়ে আরো বৃহৎ পরিসরে যাবো এবং আমার শিক্ষাকে সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োগ করবো ইনশাআল্লাহ! এ পথচলায় আমার পরিবারের পাশাপাশি নকলাবাসীর দোয়া সবসময় আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”
আপনার মতামত লিখুন :